Sunday, March 27, 2016

জেনে নিন কি ভাবে বল্লাল সেন সমাজের মহা সর্বনাশ করেছে ?

হিন্দু সমাজের
এক সময়কার রাজা বল্লাল সেন
সমাজের মহা সর্বনাশ করেছেন।
যতদিন এই পৃথিবী থাকবে ততদিন
বল্লাল সেনের অনাচার ও
অনাসৃষ্টি হিন্দু সমাজ ভূলবে না।

কোটি কোটি নর-নারীর মনে
যে ঘৃনা, বিদ্বেষ অপমান ও
হিংসার অাগুন তিনি
জ্বেলেছিলেন তা অাজও হিন্দু
সমাজকে তিলে তিলে পুড়িয়ে
মারছে।
বল্লাল সেনের জন্ম নবদ্বীপে।
১০৬৬ খৃষ্টাব্দে বল্লাল সেন
রাজা হলেন। তিনি ছিলেন
ধর্মে বৌদ্ধ এবং তাঁর গুরু ভট্ট-পাদ
সিংহগিরি তাকে দীক্ষা
দিয়ে শৈব মতে অানলেন।
বাংলার রাজা বল্লাল সেন
বৌদ্ধ ধর্ম ত্যাগ করে হলায়ুদ
উমাপতি নামক দুই ব্রাহ্মণের
সাহায্য চান। হলায়ুদ বল্লালের
মন্ত্রী ও উমাপতি তাঁর
পঞ্চরত্নের অন্যতম রত্ন ছিলেন। এই
দুই ব্রাহ্মণের সাহায্যে বল্লাল
সেন ছলে-বলে কৌশলে
বাংলাদেশে ব্রাহ্মণ প্রাধান্য
স্থাপন করেন। তাঁর অনুষ্ঠিত
অত্যাচার ও ব্যাভিচারে
দেশবাসী যন্ত্রণায় কাতর হয়।
রাজা অত্যাচারী হলে
প্রজারা অশেষ দুঃখ পায়।
ব্রাহ্মণের বশতা স্বীকার করার
নাম ব্রাহ্মণ্য ধর্ম। ব্রাহ্মণদের
অত্যাচারের ফলে অনেক মানুষ
হিন্দুধর্ম ত্যাগ করে বৌদ্ধধর্ম গ্রহন
করেন এবং তাঁরা বেশ ভালই
ছিলেন। বল্লাল সেন বৌদ্ধধর্ম
উচ্ছেদ করেন এবং
দ্বেষ,ঈর্ষা,স্বার্থপূর্ণ
নৈতিকতাহীন ব্রাহ্মণ ধর্ম
প্রচারে রত হলেন। যার ফলে
বাংলাদেশে শত শত জাতি ও
উপজাতির সৃষ্টি হলো অাত্ন-
কলহ, ঝগড়া- বিবাদ, হিংসা,
ঘৃনায় জাতি অসার ও বলহীন
হলো।
এই সুযোগে বিদেশীরা
বাংলা আক্রোমন করলো এবং
হিন্দুরা বিদেশীদের পদানত
হলো। আনন্দ ভট্টকৃত বল্লাল
চরিতে দেখা যায় – নিশ্চিতং
জারজং সোহপি দুস্কর্ম
মন্দবিস্তথা। চন্ডাল ডোম
কন্যাদৌ রতোহসেযৌ সাধু
পীড়কঃ। অর্থাৎ বল্লাল, বিজয়
সেনের জারজ পুত্র, দুস্কর্ম্ম পরায়ণ,
সাধু পীড়ক, ডোমকন্যা ও চন্ডাল
কন্যায় আসক্ত ছিলেন। তিনি
চানুক্য রাজকন্যা রন্নাদেবীকে
বিবাহ করেন। তাঁর পালিত
ব্রাহ্মণগনের প্ররোচনায় তিনি
সকল বৌদ্ধ প্রজাগণকে জোরপূর্বক
শিষ্য ও সেবক শ্রেনীভূক্ত করতে
আইন জারী করেন। প্রজাগন সহজে
ধর্মত্যাগ করে ব্রাহ্মণদের
শিষ্যত্ব মেনে নিলো না।
দেশে বিদ্রোহের তুমুল ঝড়
উঠলো। প্রজাগণ রাজার সাথে
সকল সহযোগিতা ত্যাগ করল।
যে সকল জনসাধারন রাজার ও
ব্রাহ্মণদের নিয়মনীতি মানলো
না তাঁদের পতিত ঘোষনা করা
হলো। ব্রাহ্মণ পন্ডীতদের দেয়া
ঘুষের মহিমায় শাস্ত্রের নামে
জালিয়াতি করে প্রচার করলো
– ব্রাহ্মণ বাদে বাকি সকল মানব
শূদ্র। সকলেই হীন, নীচ,পতিত,
অন্ত্যজ,অস্পৃশ্য ও বর্ণ সঙ্কর। ব্যাস
সংহিতার নামে প্রচার করা
হলো বর্দ্ধকী নাপিতো গোপ
আশাপঃ কূম্ভকারকঃ বণিক,
কিরাত, কায়স্থ, মালাকার,
কুটুমিনঃ। বরট মেদচন্ডাল
দাসশ্বপচ কোলকাঃ।
এতহস্ত্যজাঃ সমাখ্যাত। যে
চান্যেচ গবশনা। এষাং
সম্ভাষণাং স্নানং দর্শনাদর্ক
বীক্ষণম্। (১ম অধ্যায়) অর্থাৎ সূত্রধর,
নাপিত, গোপ, আশাপ কুম্ভকার,
বণিক, কিরাত, কায়স্থ,
মালাকার, কুটুম্বী, মেদ, চন্ডাল,
দাস, শ্বপচ ও কোল জাতি – এরা
অন্ত্যজ এবং গোখাদকের ন্যায়
প্রয়োজনহীন। এদের সঙ্গে কথা
বললে স্নান করতে হয় এবং
দেখলে সূর্য দেখতে হয়।
“কায়স্থে নোদরস্থেন”
মাতুর্মাংসং ন খাদিতং। তত্র
নাস্তি কৃপাতস্য অদন্ততৈব
কারণম।। স্বর্ণকার স্বর্ণ বণিক
কায়স্থশ্চ ব্রজেশ্বর। নরেষু
মধ্যেতে ধর্ত্তাঃ কৃপাহীনাঃ
মহীতলে।। (ব্রহ্মবৈবর্ত্ত পুরাণ,
শ্রীকৃষ্ণ জন্ম খন্ড, ৮৫ অধ্যায়)
অর্থাৎ কায়স্থগন মায়ের গর্ভে
থেকে মায়ের মাংস খায়না
কেন? সেখানেও তাঁর দয়া নাই।
তাঁর দাঁত ওঠে নাই। হেই
ব্রজেস্বর! স্বর্ণকার, স্বর্ণবনিক ও
কায়স্থ -এরা জগতে মহা চালাক
ও নিষ্ঠুর। এই রূপ নানা প্রকার ছড়া,
শ্লোক ও গল্প লিখে বল্লাল
সেনের পোষা তথাকথিত
ব্রাহ্মণের দল দেশে দেশে,
গ্রামে গ্রামে জাতি বিদ্বেষ
প্রচার করে। বলদেব ভট্ট ঘোষনা
করলেন ব্রাহ্মণ বাদে সকল মানব
সমাজ সঙ্কর বর্ণের।
পরশুরাম সংহিতা নামক একটি
নোংরা বইয়ে শুদ্র বিদ্বেষী
ব্রাহ্মণেরা প্রচার করলেন,
গোপের বীর্যে বারুজীবি,
বারুজীবির বীর্যে তেলী,
তেলীর বীর্যে কর্মকার,
কর্মকারের বীর্যে মালাকার,
মালাকারের বীর্যে পট্টিকার
এ ভাবে পট্টিকারের দ্বারা
কুম্ভকার, কুম্ভকারের দ্বারা
কুবেরী এবং কুবেরীর দ্বারা
নাপিতের জন্ম হয়েছে। মনু
সংহিতা ও মহাভারতের নামে
প্রচার করা হলো ক্ষত্রিয়-স্বামী
ও ব্রাহ্মণী-স্ত্রীতে মিলনের
ফলে সূত জাতি জন্ম।
বৈশ্য-স্বামী ও ক্ষত্রিয়-
স্ত্রীতে মাগধ জাতির জন্ম।
এবং বৈশ্য-স্বামী ও ব্রাহ্মণী
স্ত্রীতে বৈদেহ জাতির জন্ম।
(মনু ১০/১১ মহাভারত, অনুশাসন
৪৮/১০) কিন্তু পৌরাণিক
কাহিনীতে অন্য প্রকার দেখা
যায়। পিতা জমদগ্নি ব্রাহ্মণ,
মাতা রেণুকা ক্ষত্রিয় কন্যা;
পুত্র জন্মিলেন পরশুরাম। তিনি সূত
না হয়ে ব্রাহ্মণ হলেন। কেহ
প্রচার করলেন শূদ্র পিতা ও
ব্রাহ্মণী মাতাতে যে সন্তান
হয় সেই সন্তান হয় চন্ডাল। কিন্তু
ইতিহাস বলে অন্য কথা। মঘধের
রাজা বিন্দুসার শুদ্র, বিবাহ
করেন এক ব্রাহ্মণীকে পুত্র হলেন
বিশ্ববিখ্যাত ক্ষত্রিয় রাজা
অশোক। অশোক পন্ডিতদের
তৈরী শ্লোকের প্রভাবে
চন্ডাল হন নাই। কিন্তু শাস্ত্রে
বর্ণ সংঙ্কর অন্য প্রকার। তিনটি
বিষয় সস্পর্কে লেখা হলে অার
কেহ বর্ণ সংঙ্কর সস্পর্কে বিভিন্ন
জাতির উপর কোন পাষন্ড
অত্যাচার করতে অার সাহসী
হবে না। শ্রীকৃষ্ণ গীতায়
অর্জুনকে বলেছেন, “স্ত্রীষু দুষ্টাসু
বাঞেয় জায়তে বর্ণ সঙ্কর।
অর্থাৎ হে অর্জুন স্ত্রীগন অসতী
হলে বর্ণ সঙ্কর উৎপন্ন হয়। মহর্ষি মনু
বললেন ব্যাভিচারেন বর্ণানাম
বেদ্য বেদনেন চ।
সকর্ম্মনাঞ্চ ত্যাগেন জায়ন্তে
বর্ণসঙ্করাঃ”। (মনু ১০/২৪) অর্থাৎ
চার বর্ণের মধ্যে ব্যাভিচার
ঘটলে, বিবাহের অযোগ্য
কন্যাকে বিবাহ দিলে এবং স্ব
স্ব বর্ণের কাজ ত্যাগ করলে বর্ণ
সঙ্কর উৎপন্ন হয়। সব জাতির মধ্যেই
সব সময় অল্প বা বেশী ব্যাভিচার
চলছে এবং সব জাতির মধ্যেই বর্ণ
সঙ্কর কিছু কিছু আছে। দ্বিতীয়ত
বলা যায় কৌলিন্যপ্রথা, যৌতুক
প্রথা, বৃদ্ধ বিবাহ, বাল্য বিবাহ,
একাধিক বিবাহ প্রভৃতি কারনে
সব জাতির মধ্যেই বিবাহের
অযোগ্য স্বামী -স্ত্রীতে
বিবাহ কাজ চলছে সূতরাং সব
জাতিতেই বর্ণ সঙ্কর বিদ্যমান।
তৃতীয়তঃ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য
ও শূদ্র এই চার বর্ণের মধ্যে প্রত্যেক
বর্ণের কিছু লোক নিজ বর্ণের
কর্মত্যাগ করে অন্য পেশা গ্রহন
করেছেন। ব্রাহ্মণের
ব্রাহ্মণোচিত কাজ ছিল
বেদপাঠ, ব্রহ্মবিদ্যা, যজন, যাজন,
ধর্ম প্রচার ইত্যাদি। তাদের
মধ্যে কেহ কেহ ব্রাহ্মণ কার্য
ত্যাগ করে উকিল, ব্যবসায়ী,
ডাক্তার, কবিরাজ, জমিদার, গুরু,
পাচক, গাড়ী চালক ইত্যাদি
পেশা গ্রহন করেছেন। ফলে মনুর
মতে তাদের ঘরেও বর্ণ সঙ্কর জন্ম
নিচ্ছে। মনুর মতে বর্ণ সঙ্কর দ্বারা
দেশ আজ আচ্ছন্ন। রাজা গনেশ,
রাজা আদিশূর এরা ব্রাহ্মণ,
ক্ষত্রিয় না শূদ্র আজ পর্যন্ত তার
কোন মিমাংসা হয় নাই।
বর্তমান ব্রাহ্মণ সমাজ আটশত
ভাগে বিভক্ত। এরা অন্যের
হাতের খাবার গ্রহন করে না।
দাক্ষিণাত্যে বহু ব্রাহ্মণ নিজ
মাতা অথবা স্ত্রীর হাতে জলও
পান করেন না। দেশের সব
শ্রেণীর মধ্যে বহুবিধ কূসংস্কার
ও ধর্মান্ধতা প্রচারে বল্লাল
সেন ও তার পুরোহিতেরা অনেক
কূকাজ এবং কূরীতি প্রচলন
করেছেন। বাংলাদেশে
জাতি সমন্ধে বহু মিথ্যা ধারনা
আছে। বৈদ্যগন বিশুদ্ধ ব্রাহ্মণ
বংশ উৎপন্ন। এরা সংখ্যায় কম
হলেও বিদ্যা ও বুদ্ধিতে সর্ব
জাতির উপরে। কায়স্থগন ছিলেন
ক্ষত্রিয়। রাজকার্য ও মন্ত্রীত্বে
চিরদিনই এরা অগ্রণী। ব্রাহ্মণের
আহবানে যারা ব্রাহ্মণ ধর্মে
প্রবেশ করলেন পরে তাদেরই
ঘোষনা করা হলো গোপমালী
তথা তৈলী, তন্ত্রী, মোদক ও
বারুজীবি। কৃলাল কর্ম্মকাবশ্চ
নাপিতো নরশযকাঃ।। গোপ,
মালী, তৈলী, তন্ত্রী, মোদক,
বারুজীবি, কুম্ভকার, কর্মকার এবং
নাপিত এই নয়টি সমাজ নবশাখ
নামে পরিচিত এরা কেহ শূদ্র
ছিলেন না। গোপ ও বারুজীবির
মধ্যে একদল ছিলেন ক্ষত্রিয় ও অন্য
দল বৈশ্য, কর্ম্মকারদের কেহ
ব্রাহ্মণ আবার কেহ ক্ষত্রিয়
ছিলেন। নাপিতরা ছিলেন
ব্রাহ্মণ, পৌরহিত্যের কোন কোন
কাজ এরাই করতেন। মালী,
তৈলী, তন্ত্রী, মোদক ওকুম্ভকার
এরা সকলেই আগে বৈশ্য ছিলেন।
বল্লাল সেন সকলের দ্বিজত্ব
উঠিয়ে দিয়ে ব্রাহ্মণবাদের
সকল হিন্দুদের শূদ্র নামে ঘোষিত
করেন। যে সকল তৈল ব্যবসায়ী
বল্লাল সেনের নিয়ম মানলেন
না তাদের কলু বলা হলো। যে সব
মালী বল্লালের পক্ষে মাথানত
করলেন না বল্লাল সেন তাদের
কৃষি কাজের নিয়োগ করলেন।
এরাই এখন ভূঁইমালী। মাহিষ্যগন
ছিলেন বিশুদ্ধ ক্ষত্রিয় । মহারাজ
কার্ত্তবীর্য্যার্জ্জুন এদের পূর্ব
পুরুষ। ব্রাহ্মণদের সাথে এদের
বহুকাল যুদ্ধ হয়।
ক্ষত্রিয় পক্ষের নেতা ছিলেন
কীর্ত্তবীর্য এবং ব্রাহ্মণ পক্ষের
নেতা ছিলেন পরশুরাম।
ক্ষত্রিয়গন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে
বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পরেন
এবং কৃষিকাজ ও নৌকা চালনা
শুরু করেন। এদের অনেকে এখন
মাহিষ্য বা পাটনী নামে
পরিচিত। বৌদ্ধযুগের একদল সন্ত,
সাঁই বা সাধু বল্লাল সেনের
অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে
বিহারের পাহাড়ে আশ্রয় নেন
এরাই পরে সাঁইতার বা সাঁওতাল
নামে খ্যাত হন। শঙ্খনির্মিত
অলঙ্কার বিক্রেতা শাঁখারী
বা শঙ্খবনিক, কাঁশারী,
সুবর্ণবণিক, গন্ধবণিকেরা ব্রাহ্মণ
ছিলেন। বল্লাল সেন এদের
পৈতা ছিড়ে ফেলে শূদ্র
ঘোষনা করেন। সূত্রধরেরা
ছিলেন ব্রাহ্মণ। এভাবে বলা
যায় রাজা বল্লাল সেনের
অত্যাচারে তেওর, জালিক, রজক,
দুলে, বেহারা, কেওরা প্রভৃতি
অনেকেই বৈশ্য বংশে জন্ম গ্রহন
করে বল্লালের কারনে সকলেই
শূদ্র হতে বাধ্য হন। বল্লাল সেন
যে সকল ব্রাহ্মণ, বৈশ্য এবং
ক্ষত্রিয়কে জোর করে শূদ্র করেন
তাদের গৃহে পৌরহিত্য করতে
অন্য ব্রাহ্মণদের নিষেধ করে
দেন।
যে সকল ত্যাগী ব্রাহ্মণ রাজ
আদেশ অমান্য করে সাধারন সকল
মানুষের কল্যাণের জন্য ব্যাকুল
ছিলেন বল্লাল সেন তাদের
অন্তজ ঘোষনা করলেন। নাথ বা
যোগীরা বৌদ্ধতন্ত্র মতে শিব
পূঁজা করতেন। তাঁরা ছিলেন
শৈব পুরোহিত। পুরোহিত বলদেব
ভট্টের পরামর্শে বল্লাল সেন
তাদের পৈতা ছিড়ে সকল
সম্পত্তি আত্নসাৎ করেন।
বিশ্বমিত্র ঋষির বংশধর বৌদ্ধ
হবার পরেও ব্রাহ্মণদের আচার,
নিয়মনীতি কিছু কিছু পালন
করতেন। তারাই বর্তমান
রোহিদাস বা রবিদাস নামে
খ্যাত। যে সব উদীচি ব্রাহ্মণদের
সাথে বল্লাল সেনের পুরোহিত
বা ব্রাহ্মণেরা শাস্ত্র বিচারে
টিকতে পারেন নাই তাঁরাই
বর্তমান নমঃশূদ্র নামে পরিচিত।
বল্লালের অত্যাচারে হিংসা
ও নীচতায় বাংলাদেশের হিন্দু
সমাজ দিন দিন ধ্বংস হয়ে গেল।
হাজার হাজার ব্রাহ্মণের
পৈতা জোর করে ছিড়ে তাঁদের
শূদ্র ঘোষনা করলেন আর অনেক
পদলেহী শূদ্রকে তিনি ব্রাহ্মণ
উপাধি দিলেন।
বল্লালের অত্যাচারের
এখানেই শেষ নয়। ভ্রষ্ট চরিত্রের
বল্লাল সেন এক বিবাহিতা
ডোম কন্যাকে জোর করে তুলে
এনে বিয়ে করেন এবং তাঁর কৃত
পাপ অর্থ সম্পদ দ্বারা হিন্দু
সমাজের সমাজপতি ও
পন্ডীতগনকে নিমন্ত্রণ করলেন।
পার্বত্য ডোমজাতি বল্লাল
সেনের ছোয়ায় ব্রাহ্মণ
জাতিতে পরিনত হলো।
বল্লাল সেনের চরিত্র ছিল
নারী হরন ও ব্যাভিচার দোষে
কলুষিত। যে সব ব্রাহ্মণগন তাকে
মান্য করলেন তিনি তাদের
কূলীন উপাধি দিলেন।
উপসংহারে বলা যায় যে,
রাজা বল্লাল সেন সনাতন
ধর্মাবলম্বী জন সমাজের চারি
বর্ণ- ব্রাহ্মণ, বৈশ্য, ক্ষত্রিয় ও
শূদ্রের মুন্ডুপাত করে নিজের
পাপাচার ও ক্ষমতাকে হিন্দু
সমাজের মধ্যে স্থায়ী আসন
দেয়ার জন্য তাঁর পোষা
পুরোহিতদের ব্যবহার করেন।
এবং হিন্দু সমাজের মধ্যে
বর্তমান বিভেদ-বৈষম্য, ছুৎমার্গ,
অস্পৃশ্যতা, জাতভাগ,হিংসা,
ঘৃনা এবং বর্তমান সময়ে ধর্মের
নামে সকল প্রকার পাপাচারের
জন্মদাতা তিনি। তাই হিন্দু
সমাজ বর্তমানে প্রায় পঙ্গু।
তথ্যসূত্রঃ আচার্য সুভাষ শাস্ত্রী।
বেদালোক।

No comments:

Post a Comment