Sunday, May 17, 2015

আমরা কেন মূর্তি বা প্রতিমা পূজা করি ?


প্রশ্নটি করলে আমরা উত্তর দিতে পারি না। এ আমাদের দুর্ভাগ্য! যুধিষ্ঠির মহারাজকে ধর্মরূপী যক্ষ প্রশ্ন করেছিল- সবচেয়ে চঞ্চল কী
যুধিষ্ঠির মহারাজ উত্তর মন।
শ্রীমদ্ভগবদ্গীতায়ও বলা হয়েছে- ‘চঞ্চলং হি মনঃ কৃষ্ণ প্রমাথি বলবদ্দৃঢ়ম্।

তস্যাহং নিগ্রহং মন্যে বায়োরিব সুদুষ্করম্ ॥
অর্থাত হে কৃষ্ণ! মন স্বভাবতঃ চঞ্চল, মোহকারী বায়ুকে যেমন নিগ্রহ করা দুষ্কর, স মনের নিগ্রহ করাও কঠিন বলে মনে করি’(শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা, ৬/৩৪)। আর এ চঞ্চল মনকে স্থির করার জন্যই প্রতিমাপূজা বা মূর্তিতে পূজা করা হয়।
মূর্তি বা প্রতিমা ঈশ্বরের বসার স্থান মা মূর্তিপূজায় বৈদিক ঋষিগণ মাটির প্রতিমা দ্বারা প্রাণ প্রতিষ্ঠা ও চক্ষু দানের মাধ্যমে চিন্ময়ী করে, পূজার বিধান দিয়েছে ঋষিগণের এ সাহসের গর্ব আমরাই করতে পারি মূর্তিপূজা বিষয়ে চিকাগো ধর্মসভায় স্বামী বিবেকানন্দ মনোবিজ্ঞানের সাহায্যে বুঝিয়েছিলেন-`We just cannot anythings without metarialimage' বস্তুগত প্রতিচ্ছবি ছাড়া আমরা কিছু চিন্তা করতে পারি না। ‘হিন্দুরা মূর্তিপূজক ন আদর্শের পূজারী’। স্বামীজী এ কথাও বলেছেন- ‘পুতুল পূজা করে না হিন্দু কাঠ মাটি দিয়ে গড়া মৃন্ময়ী মাঝে চিন্ময়ী হেরে হয়ে যাই আত্মহারা।’ স্বামী প্রণবানন্দজী বলেছেন- ‘কাঠের পুতুলে পুতুলে প্রাণ সঞ্চার করে আমি আমার অভিপ্রেত করব। আমার শক্তি ও আশীর্বাদ তাদের মধ্যে শক্তি সঞ্চার করবে- যারা দেশের জন্য আর দশের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করবে।’ আবা শিক্ষা গ্রহণের জন্য বলেছেন- ‘হিন্দু! তুমি ক না- তুমি শক্তির পূজক, মহাশক্তির উপাসক? তো সেই শক্তির সাধনা কোথায়? শিবের হাতে ত্র তাহা দেখিয়া তুমি কী চিন্তা করিবে? শ্রীকৃষ্ণ হাতে সুদর্শন, তাহা দেখিয়া তুমি কী ভাবনা ভাবিবে? কাল হাতে রক্তাক্ত খড়গ, দুর্গার হাতে দশপ্রহরণ, তাহা দেখিয়া তুমি কী শিক্ষা লাভ করিবে? মহাশক্তির সাধনা করিয়া মানুষ দুর্বল হইতে পারে কি? একবার ধীর স্থির হইয়া চিন্তা কর।’ মূর্তিপূজা সবাই করে। কোনো আস্তিক ব্যক্তি যদি মূর্তিপূজায় অনিচ্ছু তবু তাঁর দ্বারা প্রকারান্তরে মূর্তিপূজা হয়ে কেমন করে? বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজ স সমিতি বলে থাকে- ‘আপনি বেদ মানেন, আপনি সকলে সমিতির পতাকা তলে একত্রিত হয়ে কাজ করতে পারেন।’ এ কথাও এক প্রকার মূর্তিপূজা। কীভাবে? ‘তিনি যদি বেদাদি গ্রন্থ মানেন এবং সে অনুযায়ী চলতে মনস্থ করেন তা হলে প্রকারান্তরে তার দ্বারা মূর্তিপূজা কারণ বেদও (লিখিত পুস্তক হিসেবে) মূর্তিই।ইত্যাদি গ্রন্থকে সম্মান জানানোও একপ্রকার মূর্তিপূজা’। ‘আমরা যখন কোনো বিদ্বান ব্যক্তিকে সম্মান জানাই, তাতে আমরা তাঁর বিদ্যাকেই সম্মান জানালাম, রক্তমাংসের শরীরটিকে নয়। এইরূপই যে ব্যক্তি মূর্তিতে ভগবানকে মানেন, তাঁরা আসলে ভগবানকেই সম্মান জানিয়ে থাক মূর্তিকে নয়।’ (মূর্তিপূজা- স্বামী রামসুখদাস) সুতরাং ঐ অর্থে সবাই মূর্তির পূজক। লক্ষণীয় য পূজায় প্রথমেই ঘট বসানো হয় যা অতীব বিজ্ঞ সম্মত। ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুত, ব্যোম (মাটি, জ বাতাস ও আকাশ) এই পঞ্চতত্ত্বের সমন্বয় তথা সৃষ্টির প্রথম প্রাণীর আবির্ভাব যে জলে, তারই আবা জানানো হয় ঐ ঘটে। ঘট এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ও ম দেহভাণ্ডের প্রতীক। ঘট, পট, মূর্তি, বৃক্ষ, পা পাখি সবার মধ্যেই সনাতনধর্মাবলম্বীগণ ঈশ্ দর্শন করেন এবং গুণাগুণ বিচার করে হাজার বছর পূর্বেই ঋষিগণ পূজার বিধান দিয়েছেন। ভারসাম্য বজায় রাখতে বৃক্ষরোপণ, পশু-পাখি সরকারও এখন তত্‍পর।

10 comments:

  1. মনটা ভরে গেল......

    ReplyDelete
  2. না তাস্তে প্রাতীমা আস্থি ( রীগ বেদ ৩২ অধ্যায় ৩ নং অনুচ্ছেদ )
    “একম ব্রহ্মা দ্বৈত্য নাস্তি নহিনা নাস্তি কিঞ্চন”(ঋকবেদ ২;৪৫;১৬)
    “একম এবম অদ্বৈত্তম”(ঋকবেদ ১;২;৩)

    ReplyDelete
  3. হিন্দু ধর্মে পূজা নিষিদ্ধ। রেফারেন্স সহ প্রমান দিলামঃ
    ==================
    ১. না তাস্তে প্রাতীমা আস্থি ( রীগ বেদ ৩২ অধ্যায় ৩ নং অনুচ্ছেদ )
    অর্থাৎ ঈশ্বরের কোন প্রতি মূর্তি নেই ।
    ২. যারা নিজের বিবেক বুদ্ধি হারিয়েছে তাঁরাই মূর্তি পূজা করে ( ভগবৎ গীতা অধ্যায় ৭, অনুচ্ছেদ ২০ নম্বর ) ।
    রেফারেন্স সহ দিলাম ।
    ৩. হিন্দুরা অনেক দেব দেবির পুজা করলেও হিন্দু ধর্ম গ্রন্থ গুলোতে হিন্দুদের কেবল মাত্র এক জন ইশ্বরের উপাসনা করতে বলা হয়েছে॥
    বেদের ‘ব্রহ্ম সুত্র’ তে আছে “একম ব্রহ্মা দ্বৈত্য নাস্তি নহিনা নাস্তি কিঞ্চন” অর্থাৎ ইশ্বর এক তার মত কেউ নেই কেউ নেই সামান্যও নেই । আরও আছে “সে একজন তারই উপাসনা কর” (ঋকবেদ ২;৪৫;১৬)।
    “একম এবম অদ্বৈত্তম” অর্থাৎ সে একজন তাঁর মত আর দ্বিতীয় কেউ নেই (ঋকবেদ ১;২;৩) ।
    “এক জনেই বিশ্বের প্রভু” (ঋকবেদ ১০;১২১;৩) ।
    ৪. হিন্দু ধর্মে মুর্তি পুজা করতে নিষেধ করা হয়েছে॥
    ভগবত গীতা – অধ্যায় ৭ – স্তব ২০ - [ যাদের বোধশক্তি পার্থিব আকাঙক্ষার মাধ্যমে বিলুপ্ত হয়ে গেছে শুধু তারাই উপদেবতার নিকটে উপাসনা করে। ]
    ৫. ভগবত গীতা – অধ্যায় ১০ – স্তব ৩ -
    [ তারা হচ্ছে বস্তুবাদি লোক ,তারা উপদেবতার উপাসনা করে ,তাই তারা সত্যিকার স্রস্টার উপাসনা করে না।]
    ৬. যজুর্বেদ – অধ্যায় ৪০- অনুচ্ছেদ ৯ –
    [ অন্ধতম প্রভিশান্তি ইয়ে অশম্ভুতি মুপাস্তে – যারা অশম্ভুতির পুজা করে তারা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। তারা অধিকতর অন্ধকারে পতিত হয় শাম মুর্তির পুজা করে । অশম্ভুতি হল – প্রাকৃতিক বস্তু যেমন- বাতাস,পানি,আগুন । শাম মুর্তি হল – মানুষের তৈরী বস্তু যেমন - চেয়ার ,টেবিল ,মূর্তি ইত্যাদি।]

    সুতরাং আমরা জানতে পারলাম হিন্দুধর্মে মূর্তিপূজা কঠিনভাবে নিষেধ ৷ কিন্তু পন্ডিতরা সাধারণ হিন্দুদের ধোকা দেয় নিজেদের পেট পালার জন্য ৷ তাই সাবধান হোন কারণ আপনার ধর্মেই মূর্তি পূজা নিষিদ্ধ

    ReplyDelete
  4. Km Nasim কমেন্টে দুইজনকে দেখলাম ড. জাকির নায়েকের কথা শুনে তারা হিন্দু ধর্ম নিয়ে মিথ্যাচার করছে। হিন্দু ধর্মে কখনোই মূর্তি পুজা নিষেধ নয়। সনাতন ধর্ম সম্পর্কে কতিপয় অপপ্রচারকারীগণ যেসব মিথ্যা রেফারেন্স দিয়ে থাকে তা হলো
    ১. না তাস্তে প্রতিমা অস্তি
    এখানে প্রতিমা অর্থ হলো তুলনা, মানে ঈশ্বরের তুলনা নেই। যেমন আমরা বলি মাতৃপ্রতিম, মানে মাতৃতুল্য। সংস্কৃত প্রতিমা আর বাংলা প্রতিমা এক নয়। তেমনি একটি ভুল ধারণা হলো হিন্দু ধর্মে তেত্রিশ কোটি দেবদেবী। সংস্কৃত কোটি আর বাংলা কোটি এক নয়। সংস্কৃত কোটি মানে প্রকার, অর্থাৎ সনাতন ধর্মে ৩৩ প্রকার দেবদেবী
    ২. তারা যজুর্বেদ অধ্যায় ৪০ মন্ত্র ৯ এর কথা বলে। কিন্তু নিজেদের মিথ্যাচার ধরা পড়ে যাবার ভয়ে তারা ১০ ও ১১ নং মন্ত্র এরিয়ে যায়। আসলে সেখানে সম্ভূতি ও অসম্ভূতি নামে দুটো শব্দ আছে। জাকির নায়েকের অনুসারীরা সম্ভুতি এর অর্থ করে মূর্তি বা জড় জিনিসের পূজা আর অসম্ভূতি অর্থ করে প্রকৃতিপূজা। কিন্তু এটা তাদের ধারাবাহিক মিথ্যাচারেরই একটা অংশ। আসলে সম্ভূতি অর্থ সৃষ্টি এবং অসম্ভূতি অর্থ বিনাশ। যেমন আমরা বলি সজ্ঞানসম্ভূত মানে সজ্ঞানে সৃষ্ট। ৯ নং মন্ত্রে বলা হয়েছে, যারা কেবলমাত্র সম্ভূতি বা অসম্ভূতির উপাসনা করে, তারা অন্ধকারে লিপ্ত। ১০ নং মন্ত্রে বলা হয়েছে, এর কারণ এই দুইরকম উপাসনার ফল দুরকম। ১১ নং মন্ত্রে বলা হয়েছে, সম্ভূতি ও বিনাশ (অসম্ভূতি) কে যারা সমন্বয় করতে পারে, তারাই বিনাশ (অসম্ভূতি) দ্বারা মৃত্যুকে তরণ করে সম্ভূতির দ্বারা অমৃতকে লাভ করে।
    ৩. গীতা অধ্যায় ৭ অনুচ্ছেদ ২০
    মূল মন্ত্রটি হলো জড় কামনা-বাসনার দ্বারা যাদের জ্ঞান অপহৃত হয়েছে, তারা অন্য দেব-দেবীর শরণাগত হয় এবং তাদের স্বীয় স্বভাব অনুসারে বিশেষ নিয়ম পালন করে দেবতাদের উপাসনা করে। লক্ষ্য করি, এখানে মূর্তিপুজার কোনো কথাই নেই, আছে দেবোপসনার কথা যেটাকে জাকির নায়েকের অনুসারীরা মূর্তিপুজা বানিয়ে ফেলেছে। আমরা জানি, গীতা হলো শ্রীকৃষ্ণের বাণী। আর একমাত্র শ্রীকৃষ্ণই ঈশ্বরের পূর্ণ অবতার, অন্যান্য দেবদেবী হলেন আংশিক অবতার। তাই শ্রীকৃষ্ণ মানুষকে অন্য দেবদেবীর উপাসনা না করে তারই উপাসনা করতে বলেছেন। তাই হিন্দুদের মধ্যে ইস্কন সম্প্রদায়কে দেখা যায়, যারা শুধুমাত্র শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করে। আর যারা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করেন, তারাও কিন্তু মূর্তিপুজাই করেন। কিন্তু এই দেবোপসনা যে বৃথা নয়, তা ২১ ও ২২ নং মন্ত্রেই আছে। জাকির নায়েকের অনুসারীরা ইচ্ছা করেই পরের মন্ত্রগুলো বাদ দেয় যেন তাদের মিথ্যাচার ধরা না পড়ে।

    ReplyDelete
    Replies
    1. যে কথাগুলো তার সাথে যোগ করতে চাই, তা হলো, অনেকে মনে করতে পারেন আমি আমার ইচ্ছামতো সংস্কৃত শব্দের অনুবাদ করছি,তাদের জন্য বলছি,
      আপনাদের অনুবাদকে সঠিক ধরেই যজুর্বেদ অধ্যায় ৪০ অনুচ্ছেদ ৯-১১ এর জবাব দেওয়া যাবে। সম্ভূতি মানে মূর্তিপুজা আর অসম্ভুতি মানে প্রকৃতিপুজা হলেও আপনাদের মিথ্যাচারের জবাব দেওয়া যাবে। আপনারা ১০ ও ১১ নং মন্ত্র গোপন করেছেন আপনাদের মিথ্যাচারের সুবিধার্থে। আপনাদের করা তথাকথিত সঠিক অনুবাদ দিয়েই জবাব দিলাম, এই ভিডিওটি দেখুন
      https://youtu.be/rUw6vnfIjDM

      Delete
    2. আরো বলতে চাই,একই জিনিসের অনেক অর্থ হতে পারে। হতে পারে আপনাদের জাকির নায়েকের দেওয়া শব্দার্থও সঠিক আমার দেওয়া অর্থও সঠিক। কিন্তু আপনার বোঝা উচিত, সব অর্থ সব জায়গায় খাটে না। কোন বাক্যে কোন শব্দের কি অর্থ করতে হবে তা নির্ভর করে বাক্যটির অর্থে উপর। উদাহরণস্বরূপ ইংরেজি kind অর্থ প্রকার/ধরন, দয়ালু দুটোই হয়। কিন্তু একটা বাক্য দিলাম, Rahim is a kind man, এটার অর্থ যদি করেন রহিম একজন প্রকার/ধরণ লোক, তাহলে কি আপনার অনুবাদ সঠিক হলো? অনুরূপভাবে আপনি যদি আমার দেওয়া শব্দার্থ দিয়ে অনুবাদ না করে ওই মন্ত্রগুলোর অনুবাদ জাকির নায়েকের দেওয়া শব্দার্থ দিয়ে করেন, তাহলে একটি অসঙ্গতিপূর্ণ বাক্য হবে। আপনারা বলেন না তাস্তে প্রতিমা অস্তি, কিন্তু এটা কি সম্পূর্ণ মন্ত্র? অবশ্যই না। সম্পূর্ণ মন্ত্রটি হলো
      ন তস্য প্রতিমা অস্তি যস্য নাম মহদযশঃ ৷
      হিরণ্যগর্ভ ইত্যেষ মা মা হিংসীদিত্যেষ যস্মান্ন জাত ইত্যেষঃ৷৷
      এখানে প্রতিমা অর্থ প্রতিমূর্তি/মূর্তি ধরলে সম্পূর্ণ বাক্যের অনুবাদ হবে ‘তাঁহার মূর্তি বা বিগ্রহ নাই যাঁহার নামে মহৎ যশ ৷’
      একটু বিবেচনা করলেই বোঝা যাবে যে এই অর্থ মোটেই সংগত নয় ৷ কারণ মূর্তি কল্পনাই যদি যশস্বীদের যশের হানি করত তবে যতসব রাজ-মহারাজ, লাট, পন্ডিত, এমনকি স্বামী দয়ানন্দেরও যে মূর্তি তৈরী আছে তা দুষ্কৃতির স্তম্ভ বলেই বিবেচিত হতো ৷ জগতে যশস্বী ব্যক্তিগণেরই মূর্তি বা ভাস্কর্য তৈরী করে রাখা হয়, হীন ব্যক্তির নয় ৷
      আর যদি প্রতিমা অর্থ তুলনা ধরি, তাহলে হবে ‘তাঁহার তুলনা বা সাদৃশ্য নাই যাঁহার নামে মহৎ যশ ৷’
      একথাই কি যশস্বীকে বলা শোভা পায় না যে ‘আপনার তুল্য আর কেহ নাই’ ? কোন কথাতে যশস্বী খুশি হবেন তা আপনিই বিচার করে দেখুন ৷

      Delete
  5. ৪. আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মিথ্যাচার হলো গীতা অধ্যায় ১০ স্তব ৩
    [ তারা হচ্ছে বস্তুবাদি লোক ,তারা উপদেবতার উপাসনাকরে ,তাই তারা সত্যিকার স্রস্টার উপাসনা করে না।]
    জবাবঃ
    আমরা দেখবো আসলে গীতা অধ্যায় ১০ স্তব ৩ এ কি বলা হয়েছে
    যো মামজমনাদিং চ বেত্তি লোকমহেশ্বরম্।
    অসংমূঢ়ঃ স মর্ত্যেষু সর্বপাপৈঃ প্রমুচ্যতে।।৩।।
    অনুবাদঃ যিনি আমাকে জন্মরহিত, অনাদি ও সমস্ত গ্রহলোকের মহেশ্বর বলে জানেন, তিনিই কেবল মানুষদের মধ্যে মোহশূন্য হয়ে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত হন।

    ৫. ভূয়া, বানোয়াট তথ্যঃ
    বেদের ব্রহ্ম সুত্র তে আছে “একম ব্রহ্মা দ্বৈত্য নাস্তি নহিনা নাস্তি কিঞ্চন” অর্থাৎ ইশ্বর এক তার মত কেউ নেই কেউ নেই সামান্যও নেই ।
    জবাবঃ
    ব্রহ্ম সুত্র বেদের নয়।ব্রহ্ম সুত্র উপনিষদ দর্শনের ব্যাখ্যা।

    ৬. ভূয়া,মিথ্যা তথ্যঃ
    “সে একজন তারই উপাসনা কর” (ঋকবেদ২ঃ৪৫ঃ১৬)
    জবাবঃ
    ঋগ্বেদের ২য় মন্ডলে আছেই ৪৩টা সূক্ত।সেখানে ৪৫সূক্তেরসূক্তের ১৬নং ঋক কোথা থেকে আসলো??

    ৭. ভূয়া ব্যাখ্যাঃ
    “একম এবম অদ্বৈত্তম” অর্থাৎ সে একজন তাঁর মত আর দ্বিতীয় কেউ নেই (ঋকবেদ১ঃ২ঃ৩) ।
    জবাবঃ
    ঋগ্বেদের ১ম মন্ডলের ২য় সূক্তের ৩য় ঋকে গিয়ে পাওয়া গেলো এই মন্ত্রটি,

    ঋষি,মধুচ্ছন্দা।ছন্দ,গায়েত্রী।
    বয়ো তব প্রপৃঞ্চতী ধেনা জিগাতী দাশুষে।উরুচী সোমপীতয়ে।।(ঋগ্বেদ ১/২/৩)📖
    অর্থঃ
    হে বায়ু, তোমার সোমগুণ প্রকাশক বাক্য সোম পানর্থে হব্যদাতা যজমানের নিকট আসছে,অনেকের নিকট আসছে।
    *সোমরস-এক ধরণের লতার রস,যা ঘৃতের মত দেবতাদের নিকট প্রিয় পানীয়।

    ৮. মিথ্যা তথ্যঃ
    “এক জনেই বিশ্বের প্রভু” (ঋকবেদ১০ঃ১২১ঃ৩) ।জবাবঃ
    ঋগ্বেদের ১০ম মন্ডলের ১২১সূক্তের ৩য় ঋকে গিয়ে পাওয়া যায় এই মন্ত্রটি,

    ঋষি-হিরণ্যগর্ভ। ছন্দ-ত্রিষ্টুপ্।
    যঃ প্রাণতো নিমিষতো মহিত্বৈক ইদ্রজা জগতো বভূব।
    য ঈশে অস্য দ্বিপদশ্চতুষ্পদঃ কস্মৈ দেবায় হবিষা বিধেম।।(ঋগ্বেদ,১০/১২১/৩)📖
    অর্থঃ
    যিনি নিজ মহিমা দ্বারা যাবতীয় দর্শননেন্দ্রিয়সম্পন্ন গতিশক্তিযুক্ত জীবদের অদ্বিতীয় রাজা হয়েছেন,যিনি এ সকল দ্বিপদ চতুষ্পদের প্রভু।আমরা উপসনায় কি নৈবেদ্য দেবো?

    ReplyDelete
  6. ঋগ্বেদ ৩২ অধ্যায় ৩ নং অনুচ্ছেদ কি জিনিস? ঋগ্বেদ বানানও ভুল, ঋগ্বেদে আছেই ১০ টা অধ্যায়, তার উপর ঋগ্বেদ মন্ডল, সুক্ত ও মন্ত্রে বিন্যস্ত। তাহলে ৩২অধ্যায় অনুচ্ছেদ ৩ কি? ওটা যজুর্বেদ হবে। মূর্খরা যজুর্বেদের মন্ত্রকে রীগবেদ বানিয়ে ফেলেছে।

    সংস্কৃত প্রতিমা শব্দটি প্রতিম শব্দের সঙ্গে আ প্রত্যয়যোগে নিষ্পন্ন। প্রতিম শব্দের অর্থ তুলনীয়, প্রতিম শব্দটি থেকে প্রতিমা শব্দটি এসেছে। তাই ন তস্য প্রতিমা অস্তি অর্থ তার কোনো তুলনা নেই। যেমন ইংরেজি kind শব্দের একটি অর্থ দয়ালু, অন্য অর্থ প্রকার, কিন্তু আমাদের বাক্যানুসারে শব্দার্থ নির্বাচন করতে হবে।

    না তাস্তে প্রতিমা অস্তি এটা কোনো সম্পূর্ণ শ্লোক নয়। নিজেদের ভন্ডামির সুবিধার্থেই তারা সম্পূর্ণ শ্লোক না দিয়ে আংশিক শ্লোক দিয়ে থাকে। সম্পূর্ণ শ্লোকটি হলোঃ
    ন তস্য প্রতিমা অস্তি যস্য নাম মহদযশঃ ৷
    হিরণ্যগর্ভ ইত্যেষ মা মা হিংসীদিত্যেষ যস্মান্ন জাত ইত্যেষঃ৷৷
    [ শুক্ল-যজুর্বেদ ৩২৷৩ ]
    অর্থঃতাঁহার তুলনা বা সাদৃশ্য নাই যাঁহার নামে মহৎ যশ। আপনারা একটু লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন এখানে প্রতিমা অর্থ মূর্তি হলে কোনোভাবেই অর্থ মিলে না। কারণ মহৎ যশ থাকার সঙ্গে মূর্তি না থাকার কোনো সম্পর্কই নেই। উল্টো আমরা দেখতে পাবো, পৃথিবীতে যারা মহৎ যশ সম্পন্ন ও শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি, যুগে যুগে তাদেরই বিগ্রহ বা প্রতিমূর্তি নির্মাণ করা হয়েছে।
    এখানে প্রতিমা অর্থ হলো তুলনা, মানে ঈশ্বরের তুলনা নেই। যেমন আমরা বলি মাতৃপ্রতিম, মানে মাতৃতুল্য। সংস্কৃত প্রতিমা আর বাংলা প্রতিমা এক নয়।

    ReplyDelete
  7. https://docs.google.com/document/d/19Q0NscEd8t8vMtR_0x-vVfQLf60CQna1fHeo1zE_KOQ/edit?usp=drivesdk

    ReplyDelete
  8. গীতার বহু যায়গায় দেবদেবীর উপাসনা করতে বলা হয়েছে।

    গীতা দ্বাদশ অধ্যায় শ্লোক ১-২

    অর্জুন উবাচ
    এবং সততযুক্তা যে ভক্তাস্ত্বাং পর্যুপাসতে।
    যে চাপ্যক্ষরমব্যক্তং তেষাং কে যোগবিত্তমাঃ।।১।।

    অনুবাদঃ অর্জুন জিজ্ঞাসা করলেন-এভাবেই নিরন্তর ভক্তিযুক্ত হয়ে যে সমস্ত ভক্তেরা যথাযথভাবে তোমার আরাধনা করেন এবং যাঁরা ইন্দ্রিয়াতীত অব্যক্ত ব্রহ্মের উপাসনা করেন, তাঁদের মধ্যে কারা শ্রেষ্ঠ যোগী।

    শ্রীভগবানুবাচ
    ময্যাবেশ্য মনো যে মাং নিত্যযুুক্তা উপাসতে।
    শ্রদ্ধয়া পরয়োপেতাস্তে মে যুক্ততমা মতাঃ।।২।।

    অনুবাদঃ শ্রীভগবান বললেন-যাঁরা তাঁদের মনকে আমার সবিশেষ রূপে নিবিষ্ট করনে এবং অপ্রাকৃত শ্রদ্ধা সহকারে নিরন্তর আমার উপাসনা করেন, আমার মতে তাঁরাই সর্বশ্রেষ্ঠ যোগী।

    https://krishnalela.blogspot.com/2019/03/srimad-bhagavad-bangla-gita.html?m=1

    গীতা ৩য় অধ্যায় শ্লোক ১২

    ইষ্টান্ ভোগান্ হি বো দেবা দাস্যন্তে যজ্ঞভাবিতাঃ।
    তৈর্দত্তানপ্রদায়ৈভ্যো যো ভুঙক্তে স্তেন এব সঃ।।১২।।

    অনুবাদঃ যজ্ঞের ফলে সন্তুষ্ট হয়ে দেবতারা তোমাদের বাঞ্ছিত ভোগ্যবস্তু প্রদান করবেন। কিন্তু দেবতাদের প্রদত্ত বস্তু তাঁদের নিবেদন না করে যে ভোগ করে, সে নিশ্চয়ই চোর।

    https://krishnalela.blogspot.com/2019/02/bangla-gita-chapter-3.html?m=1

    গীতা ৯ম অধ্যায় শ্লোক ২৩

    যেহপ্যন্যদেবতাভক্তা যজন্তে শ্রদ্ধয়ান্বিতাঃ।
    তেহপি মামেব কৌন্তেয় যজন্ত্যবিধিপূর্বকম্।।২৩।।

    অনুবাদঃ হে কৌন্তেয়! যারা অন্য দেবতাদের ভক্ত এবং শ্রদ্ধা সহকারে তাঁদের পূজা করে, প্রকৃতপক্ষে তারা অবিধি পূর্বক আমারই পূজা করে।

    https://krishnalela.blogspot.com/2019/03/srimad-bhagavad-gita-in-bengali-chapter_20.html?m=1

    ReplyDelete